প্রতিটি ধর্মেই কিছু পবিত্র স্থান ও বিষয় রয়েছে, যেগুলোকে তার অনুস্বারিরা সম্মান করেন এবং মর্যাদার চোখে দেখে, আর তা রক্ষা করতে সকলে হাতে হাত মিলিয়ে ঝাপিয়ে পরে। আমাদের ইসলাম ধর্মেও এমন কিছু পবিত্র স্থান ও বিষয় রয়েছে তন্মদ্ধ্যে আল-আক্বসা অন্যতম পবিত্র স্থান, পবিত্র মক্কা মদিনার পরে আল-আক্বসা পবিত্রতম স্থান।
পবিত্র কোরআনে আল-আক্বসা সম্পর্কে যা বলা হয়েছে-

১. পবিত্র ভুমি : ‘হে আমার সম্প্রদায়! আল্লাহ তোমাদের জন্য যে পবিত্র ভূমি নির্দিষ্ট করেছেন তাতে তোমরা প্রবেশ করো এবং পশ্চাদপসরণ কোরো না, করলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সুরা : মায়িদা, আয়াত : ২১)
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আয়াতে পবিত্র ভূমি দ্বারা বায়তুল মুকাদ্দাস উদ্দেশ্য।

২. বরকতময় ভুমি : ‘যে সম্প্রদায়কে দুর্বল গণ্য করা হতো তাদেরকে আমি আমার কল্যাণপ্রাপ্ত রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী করি।’
(সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৩৭)

৩. মহানবী (সা.)-এর স্মৃতিধন্য ভূমি : ইসরা ও মিরাজের রাতে আল্লাহ রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে মসজিদুল আকসা পরিভ্রমণ করান।
পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে – ‘পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তাঁর বান্দাকে রাতে ভ্রমণ করিয়েছিলেন মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা : বনি ইসরাইল, আয়াত : ১)

৪. মুক্তিকামীদের ভূমি : আল্লাহ যুগে যুগে মুক্তিকামী মানুষকে ফিলিস্তিন ভূমিতে আশ্রয় দিয়েছেন। যেমন—লুত (আ.) সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘এবং আমি তাকে ও লুতকে উদ্ধার করে নিয়ে গেলাম সেই দেশে, যেখানে আমি কল্যাণ রেখেছি বিশ্ববাসীর জন্য।’
(সুরা : আম্বিয়া, আয়াত : ৭১)

হাদিসে আল-আকসার বৈশিষ্ট্য

পবিত্র কোরআনের মতো হাদিসেও আল-আকসার মর্যাদাপূর্ণ বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে। এর কয়েকটি হলো—

১. যে মসজিদ ভ্রমণে সওয়াব মেলে : হাদিসে সওয়াবের নিয়তে তিনটি মসজিদ ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেছেন, মসজিদুল হারাম, মসজিদুর রাসুল (মসজিদে নববী) এবং মসজিদুল আকসা—এই তিন মসজিদ ছাড়া অন্য কোনো মসজিদের উদ্দেশে সফর করা যাবে না। (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১১৮৯)

২. দাজ্জাল থেকে নিরাপদ : আল্লাহ তাআলা মসজিদুল আকসাকে দাজ্জালের হাত থেকে রক্ষা করবেন। হাদিসে এসেছে, ‘দাজ্জাল পৃথিবীতে ৪০ দিন অবস্থান করবে। তার রাজত্ব সর্বত্র বিস্তার লাভ করবে। তবে চার মসজিদ তার নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকবে। তা হলো কাবা, মসজিদে রাসুল, মসজিদুল আকসা ও মসজিদে তুর।’ (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস : ২৩১৩৯)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Facebook
Twitter
LinkedIn